থানায় দায়ের করা অভিযোগের বরাত দিয়ে ঈশ্বরদী থানার ওসি (তদন্ত) অরবিন্দ সরকার জানান, প্রায় দু’মাস আগে মিতুর সাথে আরিফের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পরই আরিফ শ্বশুরবাড়ি থেকে এক লাখ টাকা যৌতুক এনে দেয়ার জন্য স্ত্রী মিতুর উপর চাপ দিতে থাকেন। সম্প্রতি আরিফ বলেন, তার ছোট ভাইকে বিদেশে পাঠানোর জন্য ছয় লাখ টাকা জরুরি ভিত্তিতে দিতে হবে। এতে আরিফের শ্বশুর মজিবর রহমান অপরাগতা প্রকাশ করলে তার মেয়ের উপর নেমে আসে নির্যাতন।
আহত মিতু খাতুন জানান, ঘটনার দিন ২৫ জানুয়ারি দুপুরে স্বামী আরিফ তাকে পানির সাথে কৌশলে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তা পান করান। এতে তিনি ঘুমিয়ে পড়লে প্রথমে তার মাথার চুল ও ভ্রু কেটে দেন আরিফ। উন্মত্ত স্বামী আরিফ তার স্ত্রীর মুখে বিষাক্ত তরলও স্প্রে করেন। পরে তিনি জানতে পারেন স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। খবর পেয়ে মিতুর বাবা-মাসহ স্বজনরা এসে উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে ৩দিন চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাড়িতে নিয়ে আসা হয় মিতুকে।
গৃহবধু মিতু জানান, তিনি যৌতুকলোভী স্বামী আরিফের বিচার চান।
মিতুর বাবা মজিবর রহমান বলেন, যৌতুকের জন্য তার মেয়েকে হত্যার উদ্দেশে এমন নির্যাতন করা হবে তা তিনি কল্পনাও করতে পারেননি। তিনি বলেন, থানায় অভিযোগ দিয়েছি। পুলিশ খোঁজখবর নিচ্ছে। অভিযুক্ত জামাই আরিফ হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
ওসি(তদন্ত) অরবিন্দ সরকার জানান, মিতুর মুখে এসিড দেয়া হয়েছে কিনা তা তারা নিশ্চিত নন। তবে কি ধরণের তরল পদার্থ দেয়া হয়েছে এটা চিকিৎসকরা ক্লিনিক্যালি পরীক্ষা করে ভাল বলতে পারবেন। তিনি জানান, মিতুর মুখের চামড়া পুড়ে উঠে গেছে।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ঈশ্বরদী সার্কেল) ফিরোজ কবীর জানান, আহত মিতু প্রথমে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এরপর তার বাবা ঘটনার ৪ দিন পর বৃহস্পতিবার বিকেলে ঈশ্বরদী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি গুরুত্বের সাথে নিয়ে প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। অভিযুক্ত স্বামী আরিফকে শুক্রবার(২৯ জানুয়ারি) গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে পাবনা জেলহাজতে পাঠান হয়েছে।